সংক্ষেপে ইহাই হল ইসলাম

بسم الله الرحمن الرحيم


❤⚠❤⚠❤

🔵 মহান আল্লাহ কুরআনে বলেছেন, 🔴

🔴 { হে মানব সমাজ! তোমরা তোমাদের পালনকর্তার এবাদত কর, যিনি তোমাদিগকে এবং তোমাদের পূর্ববর্তীদিগকে সৃষ্টি করেছেন। তাতে আশা করা যায়, তোমরা পরহেযগারী অর্জন করতে পারবে। ( 2:21 )

🔵 যে পবিত্রসত্তা তোমাদের জন্য ভূমিকে বিছানা এবং আকাশকে ছাদ স্বরূপ স্থাপন করে দিয়েছেন, আর আকাশ থেকে পানি বর্ষণ করে তোমাদের জন্য ফল-ফসল উৎপাদন করেছেন তোমাদের খাদ্য হিসাবে। অতএব, আল্লাহর সাথে তোমরা অন্য কাকেও সমকক্ষ করো না। বস্তুতঃ এসব তোমরা জান। ( 2:22 )

🔴 এতদসম্পর্কে যদি তোমাদের কোন সন্দেহ থাকে যা আমি আমার বান্দার প্রতি অবতীর্ণ করেছি, তাহলে এর মত একটি সূরা রচনা করে নিয়ে এস। তোমাদের সেসব সাহায্যকারীদেরকে সঙ্গে নাও-এক আল্লাহকে ছাড়া, যদি তোমরা সত্যবাদী হয়ে থাকো। ( 2:23 )

🔵 আর যদি তা না পার-অবশ্য তা তোমরা কখনও পারবে না, তাহলে সে দোযখের আগুন থেকে রক্ষা পাওয়ার চেষ্টা কর, যার জ্বালানী হবে মানুষ ও পাথর। যা প্রস্তুত করা হয়েছে কাফেরদের জন্য। ( 2:24 )


🔴 আর হে নবী (সাঃ), যারা ঈমান এনেছে এবং সৎকাজসমূহ করেছে, আপনি তাদেরকে এমন বেহেশতের সুসংবাদ দিন, যার পাদদেশে নহরসমূহ প্রবাহমান থাকবে। যখনই তারা খাবার হিসেবে কোন ফল প্রাপ্ত হবে, তখনই তারা বলবে, এতো অবিকল সে ফলই যা আমরা ইতিপূর্বেও লাভ করেছিলাম। বস্তুতঃ তাদেরকে একই প্রকৃতির ফল প্রদান করা হবে। এবং সেখানে তাদের জন্য শুদ্ধচারিনী রমণীকূল থাকবে। আর সেখানে তারা অনন্তকাল অবস্থান করবে।
( 2:25 ) }

⚠️🔵⚠️🔴⚠️

⚠️কুরআন ব্যতীত ইসলামের অন্য কোন উৎস আছে কি?
🔴 হ্যাঁ, রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লামের সুন্নাহ বা হাদিস (রাসূল সা. এর কথা, কাজ ও মৌন-সম্মতি) ইসলামের দ্বিতীয় উৎস। আর সুন্নাহ বা হাদীস হল আমানতদারিতা ও বিশ্বস্ত সূত্রে সাহাবীদের থেকে সংকলিত রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লামের কথা, কাজ ও মৌন-সম্মতি। সুন্নাহ বা হাদীসের উপর বিশ্বাস করা ইসলামের মৌলিক বিশ্বাসের অন্তর্ভুক্ত। 



⚠️ রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লামের কিছু হাদীস:

🔴
مَثَلُ الْمُؤْمِنِينَ فِى تَوَادِّهِمْ وَتَرَاحُمِهِمْ وَتَعَاطُفِهِمْ مَثَلُ الْجَسَدِ إِذَا اشْتَكَى مِنْهُ عُضْوٌ تَدَاعَى لَهُ سَائِرُ الْجَسَدِ بِالسَّهَرِ وَالْحُمَّى 
 অর্থাৎ “মুমিনদের পরস্পরিক দয়া, সহমর্মিতা ও হৃদ্যতার দৃষ্টান্ত একটি দেহের মত। যখন তার মধ্যকার কোন অঙ্গ আক্রান্ত হয় তাতে সমস্ত শরীর আক্রান্ত ও অসুস্থ হয়ে পড়ে।”
🔵
أكمل المؤمنين إيمانا أحسنهم خلقا وخياركم خياركم لنسائهم خلقا
অর্থাৎ “মুমিনদের মধ্যে সেই লোকই পূর্ণাঙ্গ ঈমানদার। যার স্বভাব-চরিত্র সর্বোত্তম। আর তোমাদের মধ্যে উত্তম ঐ ব্যক্তি যে তার স্ত্রীদের নিকট উত্তম।”
🔴 
لَا يُؤْمِنُ أَحَدُكُمْ حَتَّى يُحِبَّ لِأَخِيهِ مَا يُحِبُّ لِنَفْسِهِ
অর্থাৎ “তোমাদের কেউ ততক্ষণ পর্যন্ত (পূর্ণাঙ্গ) মুমিন হতে পারবে না; যতক্ষণ সে নিজের জন্য যা পছন্দ করে তা অপর মুসলিম ভাইয়ের জন্য পছন্দ না করবে।”

🔵
الراحمون يرحمهم الرحمن ارحموا من في الأرض يرحمكم من في السماء 
অর্থাৎ “যারা দয়া করে পরম দয়ালু আল্লাহ তা‘আলা তাদের প্রতি সদয় হন। তোমরা দুনিয়ায় যারা আছে তাদের প্রতি সদয় হও; বিনিময়ে আসমানে যিনি আছেন তিনি তোমাদের প্রতি সদয় হবেন।” 

🔴
تبسمك في وجه أخيك لك صدقة
অর্থাৎ “মুসলিম ভাইয়ের সামনে তোমার মুচকি হাসি সাদকাহ হিসেবে গণ্য হবে।”
🔵
الكلمة الطيبة صدقة
অর্থাৎ “উত্তম কথাবার্তাও সাদকাহ হিসেবে গণ্য হবে।”
🔴
مَنْ كَانَ يُؤْمِنُ بِاللَّهِ وَالْيَوْمِ الآخِرِ فَلْيُحْسِنْ إِلَى جَارِهِ
অর্থাৎ “যে আল্লাহ ও শেষ দিবসের প্রতি বিশ্বাস রাখে সে যেন তার প্রতিবেশীর সাথে সদাচরণ করে।”
🔵
إِنَّ اللَّهَ لاَ يَنْظُرُ إِلَى أَجْسَادِكُمْ وَلاَ إِلَى صُوَرِكُمْ وَلَكِنْ يَنْظُرُ إِلَى قُلُوبِكُمْ وَأَعْمَالِكُمْ
অর্থাৎ “নিশ্চয় আল্লাহ তা‘আলা তোমাদের চেহারা-সুরত ও ধন-সম্পদের দিকে তাকাবেন না। বরং, তিনি তোমাদের অন্তরসমূহ ও কর্মকে দেখবেন।”
🔴
أعطوا الأجير أجره قبل أن يجف عرقه
অর্থাৎ “তোমরা শ্রমিকদেরকে তাদের ন্যায্য পাওনা দিয়ে দাও তার শরীরের ঘাম শুকানোর আগেই।”
🔵
بَيْنَمَا رَجُلٌ يَمْشِى بِطَرِيقٍ اشْتَدَّ عَلَيْهِ الْعَطَشُ فَوَجَدَ بِئْرًا فَنَزَلَ فِيهَا فَشَرِبَ ثُمَّ خَرَجَ فَإِذَا كَلْبٌ يَلْهَثُ يَأْكُلُ الثَّرَى مِنَ الْعَطَشِ فَقَالَ الرَّجُلُ لَقَدْ بَلَغَ هَذَا الْكَلْبَ مِنَ الْعَطَشِ مِثْلُ الَّذِى كَانَ بَلَغَ مِنِّى. فَنَزَلَ الْبِئْرَ فَمَلأَ خُفَّهُ مَاءً ثُمَّ أَمْسَكَهُ بِفِيهِ حَتَّى رَقِىَ فَسَقَى الْكَلْبَ فَشَكَرَ اللَّهُ لَهُ فَغَفَرَ لَهُ ». قَالُوا يَا رَسُولَ اللَّهِ وَإِنَّ لَنَا فِى هَذِهِ الْبَهَائِمِ لأَجْرًا فَقَالَ « فِى كُلِّ كَبِدٍ رَطْبَةٍ أَجْرٌ.
অর্থাৎ “এক ব্যক্তি রাস্তা দিয়ে হাঁটছিল। পিপাসা লাগলে সে একটি কূপে নেমে পানি পান করে পিপাসা মেটাল। সেখান থেকে বের হয়ে দেখতে পেল যে, একটি কুকুর হাঁপাচ্ছে এবং পিপাসায় কাতর হয়ে কর্দমাক্ত মাটি চাটছে। লোকটি বলল: পিপাসায় আমার যে অবস্থা হয়েছিল তারও ঠিক একই পরিণতি হয়েছে। সে কূপের ভিতরে নেমে নিজের মোজা ভর্তি করে পানি তুলে এনে কুকুরের সামনে ধরল। কুকুরটি পানি পান করে জীবন ফিরে পেল। আল্লাহ লোকটির কাজের শুকরিয়া আদায় করলেন এবং তার গুনাহ ক্ষমা করে দিলেন।” সাহাবীরা জিজ্ঞাসা করলেন: হে আল্লাহর রাসূল! জন্তুকে পানি পান করানো বা তার সাথে ভাল 
ব্যবহার করায়ও কি সাওয়াব আছে? রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন: “প্রত্যেক জীবন্ত প্রাণীতেই সাওয়াব আছে।”  

⚠️🔵⚠️🔴⚠️



🔵🔴🔵🔴


🔴 আমরা যদি কোনো ধর্ম সম্বন্ধে বিস্তারিত জানতে চেষ্টা করি তাহলে, আবেগ-অনুভূতির উপর ভিত্তি করে তা করা ঠিক হবে না। বরং, বুদ্ধি খাটিয়ে ও চিন্তা গবেষণা করে তা জানার চেষ্টা করতে হবে। সেজন্যই আল্লাহ তা‘আলা যখন কোন নবী প্রেরণ করেছেন তখন তাকে মু‘জিযা ও দলীল প্রমাণ দিয়েই সাহায্য করেছেন যা তাকে সত্য নবী বলে প্রমাণ করতে সহায়ক হয়।


🔵 এই বই উপস্থাপন করা হয়েছে। সেখানে মানুষের মুখে সচরাচর প্রচলিত কিছু প্রশ্নের উত্তর দেয়া হয়েছে। প্রশ্নসমূহ হল:

🔴 1- কুরআন আল্লাহ তা‘আলার বাণী এবং আল্লাহ তা‘আলা কর্তৃক নাযিলকৃত গ্রন্থ— এটা ঠিক কিনা?

🔵 2- মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম  আসলেই আল্লাহ তা‘আলার নবী কিনা?

🔴 3- ইসলাম আল্লাহ তা‘আলার মনোনীত ধর্ম এ কথা কি আসলেই সত্য?

https://islamhouse.com/bn/books/338947/

📷 বই থেকে ফটো 👇














⚠️🔴⚠️🔵⚠️

⚠️ ইসলাম কি?
🔴 ইসলাম হল তুমি আল্লাহ তা‘আলার পক্ষ থেকে শেষ নবী মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লামের উপর নাযিলকৃত বিধানকে মেনে চলবে।


⚠️ ইসলামের মৌলিক বিশ্বাস:

🔴 ১. আল্লাহর উপর ঈমান
🔵 একজন মুসলিম একমাত্র আল্লাহ তা‘আলার উপর বিশ্বাস স্থাপন করবে। যার কোন সন্তান-সন্ততি ও অংশীদার নেই। তিনি ছাড়া অন্য কেউ ইবাদাত পাওয়ার যোগ্য নন। নিশ্চয় তিনিই সত্য প্রভু। তিনি ছাড়া আর অন্য যাদেরকে মানুষ ইবাদাত করে সবই মিথ্যা। আল্লাহ তা‘আলার অনেকগুলো সুন্দর সুন্দর নাম ও গুণাবলি রয়েছে। তার প্রভুত্ব ও গুণাবলীতে কারো কোন অংশীদারিত্ব নেই। মহাগ্রন্থ আল-কুরআনে আল্লাহ তা‘আলা নিজেই নিজের পরিচয় উপস্থাপন করেছেন।
আল্লাহ বলেন:

{قُلْ هُوَ اللَّهُ أَحَدٌ (1) اللَّهُ الصَّمَدُ (2) لَمْ يَلِدْ وَلَمْ يُولَدْ (3) وَلَمْ يَكُنْ لَهُ كُفُوًا أَحَدٌ (4)﴾
🔴 অর্থাৎ “আপনি বলুন, আল্লাহ তা‘আলা এক ও একক। আল্লাহ অমুখাপেক্ষী। তিনি কাউকে জন্ম দেননি এবং কেউ তাকে জন্ম দেয়নি। এবং তার সমতুল্য কেউ নেই।” (সুরা আল-ইখলাস)
আল্লাহ তা‘আলা ছাড়া অন্য কারও কাছে কায়মনোবাক্যে দোয়া করা বা কোন ধরণের উপাসনা করা যাবে না। বরং, এ সবকিছুরই হকদার একমাত্র আল্লাহ তা‘আলা।
আল্লাহ তা‘আলা একচ্ছত্র ক্ষমতার মালিক। তিনি সৃষ্টিকর্তা, শাসনকর্তা এবং চিরঞ্জীব। তিনি সব কিছুকে পরিচালনা করেন। তিনি তার সৃষ্টির কারও প্রতি মুখাপেক্ষী নন। বরং, তার সৃষ্টির সবাই তাদের নিজ নিজ প্রয়োজনে তার উপর নির্ভর করে। তিনি সর্বশ্রোতা, সর্বদ্রষ্টা ও সর্ববিজ্ঞ। গোপন, প্রকাশ্য, বিশেষ বা সাধারণ সবকিছুই তার নিরবচ্ছিন্ন নজরদারিতে রয়েছে। আল্লাহ তা‘আলা জানেন যা হয়েছে, হবে এবং তা কিভাবে হবে। জমিনে কোন কিছুই তার অনুমতি ছাড়া হয় না। তিনি যা চান তা হয় আর যা চান না তা হয় না। তার ইচ্ছা সমস্ত সৃষ্টির ইচ্ছার উপরে। তিনি সব কিছুর উপর শক্তিমান; সর্বশক্তিমান। তিনি পরম দয়ালু সর্বাধিক উপকারী। একটি হাদীস থেকে জানা যায় যে, কোন সন্তানের উপর তার মাতৃস্নেহ যেমন প্রবল আল্লাহ তা‘আলা তার থেকেও অনেক বেশি ভালবাসেন তার বান্দাকে। আল্লাহ তা‘আলা জুলুম ও সীমালঙ্ঘন


🔵 থেকে মুক্ত। তিনি তার সমস্ত কাজ ও নির্দেশে অত্যন্ত প্রজ্ঞাবান। কেউ যখন আল্লাহ তা‘আলার কাছে কিছু চাওয়ার ইচ্ছা করে সরাসরি চাইতে পারে কারও মধ্যস্থতার প্রয়োজন হয় না।
আল্লাহ তা‘আলা ঈসা আ. তথা যীশু নন। যীশুও আল্লাহ নন। বরং ঈসা আ. নিজেই নিজেকে স্রষ্টা হওয়াকে প্রত্যাখ্যান করেছেন। আল্লাহ তা‘আলা বলেন:
﴿لَقَدْ كَفَرَ الَّذِينَ قَالُوا إِنَّ اللَّهَ هُوَ الْمَسِيحُ ابْنُ مَرْيَمَ وَقَالَ الْمَسِيحُ يَا بَنِي إِسْرَائِيلَ اعْبُدُوا اللَّهَ رَبِّي وَرَبَّكُمْ إِنَّهُ مَنْ يُشْرِكْ بِاللَّهِ فَقَدْ حَرَّمَ اللَّهُ عَلَيْهِ الْجَنَّةَ وَمَأْوَاهُ النَّارُ وَمَا لِلظَّالِمِينَ مِنْ أَنْصَارٍ (72)﴾
🔴 অর্থাৎ “যারা বলে মারইয়াম তনয় ঈসা আ.-ই আল্লাহ, তারা কাফের। অথচ, ঈসা আ. বলেছেন— হে বনী ইসরাইল! তোমরা আল্লাহর ইবাদাত কর, যিনি আমার ও তোমাদের পালনকর্তা। নিশ্চয়ই যে ব্যক্তি আল্লাহ তা‘আলার সাথে অংশীদার স্থাপন করবে আল্লাহ তা‘আলা তার জন্য জান্নাতকে হারাম করে দিবেন। তার বাসস্থান হবে জাহান্নাম। আর অত্যাচারীদের কোনই সাহায্যকারী নেই।” (সূরা আল-মায়েদাহ: ৭২)
🔵 আল্লাহ তিনজন নন। আল্লাহ তা‘আলা বলেন:
﴿لَقَدْ كَفَرَ الَّذِينَ قَالُوا إِنَّ اللَّهَ ثَالِثُ ثَلَاثَةٍ وَمَا مِنْ إِلَهٍ إِلَّا إِلَهٌ وَاحِدٌ وَإِنْ لَمْ يَنْتَهُوا عَمَّا يَقُولُونَ لَيَمَسَّنَّ الَّذِينَ كَفَرُوا مِنْهُمْ عَذَابٌ أَلِيمٌ (73) أَفَلَا يَتُوبُونَ إِلَى اللَّهِ وَيَسْتَغْفِرُونَهُ وَاللَّهُ غَفُورٌ رَحِيمٌ (74) مَا الْمَسِيحُ ابْنُ مَرْيَمَ إِلَّا رَسُولٌ قَدْ خَلَتْ مِنْ قَبْلِهِ الرُّسُلُ وَأُمُّهُ صِدِّيقَةٌ كَانَا يَأْكُلَانِ الطَّعَامَ انْظُرْ كَيْفَ نُبَيِّنُ لَهُمُ الْآيَاتِ ثُمَّ انْظُرْ أَنَّى يُؤْفَكُونَ (75)﴾
🔴 অর্থাৎ “নিশ্চয় তারা কাফের যারা বলে— আল্লাহ তিনের এক; অথচ, এক উপাস্য ছাড়া কোন উপাস্য নেই। তারা যদি স্বীয় উক্তি থেকে নিবৃত্ত না হয়, তবে, তাদের মধ্যে যারা কুফরে অটল থাকবে, তাদের উপর যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি নিপতিত হবে। তারা আল্লাহর কাছে কেন তাওবা ও ক্ষমা প্রার্থনা করে না?! আল্লাহ তা‘আলা যে ক্ষমাশীল ও পরম দয়ালু। মারইয়াম তনয় ঈসা আ. রাসূল ছাড়া আর কিছু নন। তার পূর্বে অনেক রাসূল অতীত হয়েছেন আর তার মাতা একজন সত্যবাদিনী। তারা উভয়েই খাদ্য খেতেন। দেখুন, আমি তাদের জন্য কিরূপ যুক্তি প্রমাণ বর্ণনা করি। আবার দেখুন, তারা উলটা কোন দিকে যাচ্ছে।” (সূরা আল-মায়েদাহ: ৭৩-৭৫)
🔵 আল্লাহ তা‘আলা সৃষ্টির সপ্তম দিনে বিশ্রাম নিয়েছেন— একথা বিশ্বাস করা ইসলাম প্রত্যাখ্যান করে। তিনি তার কোন ফিরিশতার সাথে কুস্তি করেছেন, তিনি মানবজাতির উপর হিংসা করেছেন বা তিনি কোন মানুষের ভিতরে মানুষের আকৃতিতে আছেন এ সব ধারণাও ইসলাম কর্তৃক প্রত্যাখ্যাত। এ ছাড়া ইসলাম মানুষের কোন আকৃতির সাথে আল্লাহ তা‘আলার সম্পৃক্ততাকে প্রত্যাখ্যান করে। কেননা, এগুলো সবই কুফরীর অন্তর্ভুক্ত। আল্লাহ তা‘আলা সবকিছুরই ঊর্ধ্বে। তিনি যে কোন প্রকার অপূর্ণাঙ্গতা থেকে মুক্ত ও দূরে। আল্লাহ তা‘আলা ক্লান্ত হন না এবং তাকে নিদ্রা বা তন্দ্রা স্পর্শ করে না।
🔴 আরবি শব্দ “اللَّهَ” (আল্লাহ) -এর অর্থ হচ্ছে— “প্রতিপালক, একক উপাস্য ও স্রষ্টা, যিনি বিশ্বজগতের সবকিছুকে সৃষ্টি করেছেন।” ‘اللَّهَ’ শব্দটি রব ও উপাস্য অর্থে আরব মুসলিম ও খ্রিষ্টানগণ ব্যবহার করে থাকে। এক ও একক উপাস্য ব্যতীত অন্য কোনো অর্থে এ শব্দটি ব্যবহৃত হয় না। এ শব্দটি কুরআন শরীফে ২১৫০ বারেরও বেশিবার ব্যবহার করা হয়েছে। ঈসা আ. সাধারণত যে ভাষায় কথাবার্তা বলতেন, আরবি ভাষার সাথে গভীর সম্পর্কশীল সেই আরামীয় ভাষায় إِلَهٌ শব্দটি “اللَّهَ” অর্থে ব্যবহৃত হয়েছে।


🔵 ২. ফেরেশতাদের উপর ঈমান
🔴 মুসলিমরা ফেরেশতাদের সম্বন্ধে বিশ্বাস করেন যে, তারা আল্লাহ তা‘আলার এক সম্মানিত সৃষ্টি। তারা একমাত্র আল্লাহ তা‘আলারই ইবাদাত করেন। আল্লাহ তা‘আলার আনুগত্য করেন এবং তার আদেশ ছাড়া কোন কাজ করেন না। ফেরেশতাদের মধ্যকার জিবরাইল আ. রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লামের কাছে ওহী (কুরআন) নিয়ে আসতেন।
৩. আসমানী কিতাবের উপর ঈমান
মুসলিমগণ বিশ্বাস করেন যে, আল্লাহ তা‘আলা তার রাসূলদের উপর ওহী হিসেবে আসমানী কিতাব নাযিল করেছেন তাদেরকে সঠিক পথ প্রদর্শন ও মানুষের জন্য সত্য দ্বীনের প্রমাণ হিসেবে। এই আসমানী কিতাবসমূহের মধ্যে মহাগ্রন্থ আল-কুরআন অন্যতম যা আমাদের প্রিয়নবী মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লামের উপর নাযিল হয়েছে। আল্লাহ তা‘আলা কুরআনকে হেফাজতের দায়িত্ব নিজ কাঁধে তুলে নিয়েছেন। যেন এর মাঝে কোন পরিবর্তন ও বিকৃতি না ঘটে। আল্লাহ তা‘আলা বলেন:
{إِنَّا نَحْنُ نَزَّلْنَا الذِّكْرَ وَإِنَّا لَهُ لَحَافِظُونَ (9)}
🔵 অর্থাৎ “নিশ্চয়ই আমি এই কুরআনকে নাযিল করেছি আর আমিই এর হেফাজতকারী।” (সূরা আল-হিজর: ৯)

🔴 ৪. নবী-রাসূলদের উপর ঈমান
🔵 মুসলিমগণ আদম আ. থেকে শুরু করে নূহ, ইবরাহীম, ইসমাইল, ইসহাক, ইয়া‘কুব, ও ঈসা আ. প্রমুখ নবীদের উপর বিশ্বাস করেন। তারা বিশ্বাস করেন মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লামের উপর নাযিল হয়েছে সর্বশেষ রিসালাত নিয়ে এসেছেন, যা পূর্ববর্তী চিরন্তন রিসালাতকেই দৃঢ় করে। মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম আল্লাহ তা‘আলার প্রেরিত শেষ নবী ও রাসূল। আল্লাহ তা‘আলা বলেন:
﴿مَا كَانَ مُحَمَّدٌ أَبَا أَحَدٍ مِنْ رِجَالِكُمْ وَلَكِنْ رَسُولَ اللَّهِ وَخَاتَمَ النَّبِيِّينَ وَكَانَ اللَّهُ بِكُلِّ شَيْءٍ عَلِيمًا (40)﴾
🔴 অর্থাৎ “মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম তোমাদের কোন (প্রাপ্তবয়স্ক) ব্যক্তির পিতা নন; বরং তিনি আল্লাহর রাসূল এবং শেষ নবী। আল্লাহ তা‘আলা সর্ববিষয়ে জ্ঞাত।” (সূরা আল-আহযাব: ৪০)
🔵 মুসলিমগণ বিশ্বাস করেন— সমস্ত নবী আল্লাহর সৃষ্ট মানুষ। এই সমস্ত নবীর কারও ভিতরে স্রষ্টা তথা আল্লাহ তা‘আলার কোন বৈশিষ্ট্য নেই।

🔴 ৫. শেষ দিবসের উপর ঈমান
🔵 মুসলিমরা বিশ্বাস করেন যে, শেষ দিবসে (পুনরুত্থিত হওয়ার দিন) সকল মানুষ পুনরুত্থিত হবে। আল্লাহ তা‘আলা তাদের কর্মকাণ্ড ও বিশ্বাসের হিসাব নিকাশ নিবেন।

🔴 ৬. তাকদীরের উপর ঈমান
🔵 মুসলিমরা তাকদীরের উপর বিশ্বাস করে। তবে, এর অর্থ এই নয় যে, মানুষদেরকে তাদের কাজ-কর্মে স্বাধীনতা দেয়া হয় নি। বরং, মুসলিমরা তাদের কাজে আল্লাহ তা‘আলা স্বাধীনতা দিয়েছেন বলে বিশ্বাস করে। অর্থাৎ তাদের স্বাধীনতা আছে ভাল ও মন্দ থেকে বেছে নেয়ার। তারা ভালো-মন্দ থেকে একটি নির্বাচন করার দায়-দায়িত্ব বহন করবে। তাকদীরের উপর বিশ্বাস চারটি বিষয়ের উপর নির্ভর করে। সেগুলো হল:

🔴1. আল্লাহ তা‘আলা সব কিছুই জানেন। অর্থাৎ তিনি জানেন কী হয়েছে এবং আগামীতে কী হবে।

🔵 2. আল্লাহ তা‘আলা যা কিছু হয়েছে বা হবে সবকিছুকে লিপিবদ্ধ করে রেখেছেন।

🔴 3. আল্লাহ যা চান তা হয় এবং যা চান না তা হয় না।
🔵 4. আল্লাহ তা‘আলা সবকিছুর সৃষ্টিকর্তা।

⚠️ (ইসলামের মৌলিক বিশ্বাস সম্বন্ধে বিস্তারিত জানতে www.islam-guide.com/beliefs ব্রাউজ করতে পারেন।)

⚠️🔵⚠️🔴⚠️


🔴🔵🌍


সংক্ষেপে ইহাই হল ইসলাম


https://islamhouse.com/bn/articles/206758/

 বর্ণনা

ইসলাম, ইসলামের মৌলিক বিষয় ও স্তম্ভসমূহ, ইসলামের সৌন্দর্য ও উদ্দেশ্য বিষয়ে এটি একটি সংক্ষিপ্ত অথচ পূর্ণাঙ্গ পরিচিতি। ইসলাম বুঝতে আগ্রহী অথবা ইসলাম গ্রহণে ইচ্ছুক যে কোনো ব্যক্তির জন্য এই পরিচিতি দিকনির্দেশক হিসেবে কাজ করবে।


📷 বই থেকে ফটো 👇










🔵🔴🌍

⚠️ কিয়ামতের দিন সম্বন্ধে ইসলামের দৃষ্টিভঙ্গি
🔴 মুসলিমগণ বিশ্বাস করেন যে, ইহকালীন জীবন পরকালীন জীবনের একটি প্রস্তুতি। দুনিয়ার এ জীবন আখেরাতের জীবনের পরীক্ষাকেন্দ্র। বিশ্বজগত ধ্বংসের পরে এই দিনটি আগমন করবে। মৃত-ব্যক্তিদেরকে আল্লাহর সামনে হিসাব-নিকাশের জন্য উত্থিত করা হবে। এ দিনটি হবে একটি নতুন জীবনের শুরু, যার কোন শেষ নেই। এ দিনকেই বলা হয় কিয়ামতের দিন।
প্রত্যেক মানুষ তাদের নিজ নিজ বিশ্বাস ও কর্মফলের মুখোমুখি হবে। যারা “لا إله إلا الله محمد رسول الله” (লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু মুহাম্মাদুর রাসূলুল্লাহ) অর্থ: “আল্লাহ ব্যতীত কোনো সত্য উপাস্য নেই, আর মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম আল্লাহর রাসূল”— এতে বিশ্বাস করে মারা গেছে, তারা মুসলিম। তারা তাদের কর্মফল হিসেবে জান্নাতে প্রবেশ করবে। সেখানে তারা হবে চিরস্থায়ী। আল্লাহ তা‘আলা বলেন:
﴿وَالَّذِينَ آمَنُوا وَعَمِلُوا الصَّالِحَاتِ أُولَئِكَ أَصْحَابُ الْجَنَّةِ هُمْ فِيهَا خَالِدُونَ (82)﴾
অর্থাৎ “আর যারা ঈমান এনেছে ও সৎকর্ম সম্পাদন করেছে তারা হবে জান্নাতি। সেখানে তারা চিরস্থায়ী অবস্থান করবে।” (সূরা আল-বাকারা: ৮২)
আর যারা “لا إله إلا الله محمد رسول الله” (লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু মুহাম্মাদুর রাসূলুল্লাহ) —তে বিশ্বাস স্থাপন না করে মারা যাবে তারা মুসলিম বলে গণ্য হবে না। তারা চিরদিনের জন্য জান্নাত থেকে বঞ্চিত হয়ে জাহান্নামে প্রবেশ করবে। আল্লাহ তা‘আলা বলেন:
﴿وَمَنْ يَبْتَغِ غَيْرَ الْإِسْلَامِ دِينًا فَلَنْ يُقْبَلَ مِنْهُ وَهُوَ فِي الْآخِرَةِ مِنَ الْخَاسِرِينَ (85)﴾
অর্থাৎ “আর যে ইসলাম ছাড়া অন্য কোন কিছুকে ধর্ম বা জীবনব্যবস্থা হিসেবে গ্রহণ করবে তা কস্মিনকালেও গ্রহণযোগ্য হবে না। আর পরকালে সে হবে ক্ষতিগ্রস্তদের অন্তর্ভুক্ত।” (সূরা আলে-ইমরান: ৮৫)
তিনি আরও বলেন:
﴿إِنَّ الَّذِينَ كَفَرُوا وَمَاتُوا وَهُمْ كُفَّارٌ فَلَنْ يُقْبَلَ مِنْ أَحَدِهِمْ مِلْءُ الْأَرْضِ ذَهَبًا وَلَوِ افْتَدَى بِهِ أُولَئِكَ لَهُمْ عَذَابٌ أَلِيمٌ وَمَا لَهُمْ مِنْ نَاصِرِينَ (91)﴾
অর্থাৎ “নিশ্চয় যারা কুফরী করেছে এবং কুফরী অবস্থায় মারা গেছে তারা যদি আজাবের বিনিময়ে সারা পৃথিবী পরিমাণ স্বর্ণও দেয় তবুও তা গ্রহণ করা হবে না। তাদের জন্য রয়েছে যন্ত্রণাদায়ক আযাব। আর তাদের কোন সাহায্যকারীও নেই।” (সূরা আলে-ইমরান: ৯১)
কেউ প্রশ্ন তুলতে পারে— আমি ধারণা করি যে, ইসলাম উত্তম ধর্ম; কিন্তু আমি যদি ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করি তাহলে পরিবার-পরিজন, বন্ধুবান্ধব, ও অন্যান্য লোকেরা আমার উপর অত্যাচার-নির্যাতন ও ঠাট্টা-বিদ্রূপ করবে। তাহলে, আমি যদি ইসলাম গ্রহণ করি দোযখ বা জাহান্নাম থেকে মুক্তি পেয়ে কি জান্নাতে প্রবেশ করতে পারব?
এ প্রশ্নের উত্তর হচ্ছে— আমরা পবিত্র কুরআন মাজীদে দেখতে পাই আল্লাহ তা‘আলা বলেছেন:
﴿وَمَنْ يَبْتَغِ غَيْرَ الْإِسْلَامِ دِينًا فَلَنْ يُقْبَلَ مِنْهُ وَهُوَ فِي الْآخِرَةِ مِنَ الْخَاسِرِينَ (85)﴾


অর্থাৎ “আর যে ইসলাম ছাড়া অন্য কোন কিছুকে ধর্ম বা জীবনব্যবস্থা হিসেবে গ্রহণ করবে তা কস্মিনকালেও গ্রহণযোগ্য হবে না। আর পরকালে সে হবে ক্ষতিগ্রস্তদের অন্তর্ভুক্ত।” (সূরা আলে-ইমরান: ৮৫)
আল্লাহ তা‘আলা রাসূল হিসেবে মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লামকে প্রেরণ করার পরে কেউ নিজেকে ইসলাম ছাড়া অন্য কোন ধর্মের সাথে সম্পৃক্ততা দেখালে আল্লাহ তা‘আলা তা গ্রহণ করবেন না। আল্লাহ তা‘আলা আমাদের সৃষ্টিকর্তা, ও অভিভাবক। তিনি দুনিয়ার সবকিছুকে সৃষ্টি করেছেন। আমাদের যতসব কল্যাণ, দয়া-মায়া, মমতা সবকিছুই তার কাছ থেকে এসেছে। এসবের পরেও যে ব্যক্তি আল্লাহ ও তার রাসূলের প্রতি ঈমান আনবে না এবং তার মনোনীত ধর্ম বা জীবনব্যবস্থা ইসলামকে মেনে নেবে না তাকে পরকালে শাস্তি দেয়াই ন্যায়পরায়ণতার কাজ। তবে, ইহকালে আমাদেরকে সৃষ্টির মুল উদ্দেশ্য হচ্ছে একক সত্ত্বা আল্লাহ তা‘আলার ইবাদাত বা আনুগত্য করা। আল্লাহ তা‘আলা বলেছেন:

(وَمَا خَلَقْتُ الْجِنَّ وَالْإِنْسَ إِلَّا لِيَعْبُدُونِ (56)﴾
অর্থাৎ “আমি মানুষ ও জ্বিন-জাতিকে সৃষ্টি করেছি শুধুমাত্র আমার ইবাদাতের জন্য।” (সূরা আয-যারিয়াত: ৫৬)
আমরা যেখানে বসবাস করছি তা খুবই সংক্ষিপ্ত জীবন। কিয়ামতের দিনে কাফেররা বিশ্বাস করবে যে, তারা দুনিয়ায় বসবাস করেছে শুধুমাত্র একদিন বা তার কিছু অংশ। আল্লাহ তা‘আলা বলেন:
﴿قَالَ كَمْ لَبِثْتُمْ فِي الْأَرْضِ عَدَدَ سِنِينَ (112) قَالُوا لَبِثْنَا يَوْمًا أَوْ بَعْضَ يَوْمٍ فَاسْأَلِ الْعَادِّينَ (113)﴾
অর্থাৎ “আল্লাহ তা‘আলা বলবেন: তোমরা বছরের গণনায় পৃথিবীতে কতদিন অবস্থান করেছিলে? তারা বলবে— আমরা একদিন বা তার কিছু অংশ পৃথিবীতে অবস্থান করেছিলাম। অতএব, গণনাকারীদেরকে জিজ্ঞাসা করুন।” (সূরা আল-মুমিনূন : ১১২-১১৩)
আল্লাহ তা‘আলা অন্যত্র বলেন:
﴿أَفَحَسِبْتُمْ أَنَّمَا خَلَقْنَاكُمْ عَبَثًا وَأَنَّكُمْ إِلَيْنَا لَا تُرْجَعُونَ (115) فَتَعَالَى اللَّهُ الْمَلِكُ الْحَقُّ لَا إِلَهَ إِلَّا هُوَ رَبُّ الْعَرْشِ الْكَرِيمِ (116)﴾
অর্থাৎ “তোমরা কি মনে করেছ যে, আমি তোমাদেরকে অযথাই সৃষ্টি করেছি এবং তোমাদেরকে আমার দরবারে ফিরে আসতে হবে না? অতএব, শীর্ষ মহীয়ান আল্লাহ তা‘আলা তিনিই সত্যিকার মালিক, তিনি ছাড়া আর কোন মা‘বুদ নেই। তিনি সম্মানিত আরশের মালিক।” (সূরা আল-মুমিনুন: ১১৫-১১৬)
পরকালের জীবনই আসল জীবন। সেটা শুধুমাত্র আত্মার জীবনই নয় বরং, তা শারীরিক জীবনও। আমরা সেখানে বসবাস করব আমাদের আত্মা ও শরীর উভয়টি নিয়েই। দুনিয়ার জীবনের সাথে আখেরাতের জীবনের তুলনা করতে গিয়ে রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন:
وَاللَّهِ مَا الدُّنْيَا فِي الْآخِرَةِ إِلَّا مِثْلُ مَا يَجْعَلُ أَحَدُكُمْ إِصْبَعَهُ فِي الْيَمِّ فَلْيَنْظُرْ بِمَ تَرْجِعُ إِلَيْهِ
অর্থাৎ “আল্লাহর কসম! কোন ব্যক্তি তার আঙ্গুলকে সমুদ্রের মধ্যে ডুবিয়ে দেয়ার পর (আঙ্গুল সরিয়ে নিলে) তার কাছে সমুদ্রের তুলনায় যতটুকু অংশ (পানি) আসে, আখেরাতের তুলনায় দুনিয়া তেমনই।”
এমনিভাবে আখেরাতের তুলনায় দুনিয়ার জীবনের মূল্য অথৈ সমুদ্রের তুলনায় কয়েক ফোটা পানির সমান ছাড়া আর কিছুই নয়।
🔴 ইসলাম গ্রহণের নিয়ম
কোন ব্যক্তি শুধুমাত্র “لا إله إلا الله محمد رسول الله” (লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু মুহাম্মাদুর রাসূলুল্লাহ) বলার দ্বারাই অমুসলিম থেকে মুসলিমে পরিণত হয়ে ইসলামের সুশীতল ছায়াতলে প্রবেশ করে। বাক্যটির অর্থ: “আল্লাহ ছাড়া কোনো সত্য ইলাহ (উপাস্য) নেই, মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম আল্লাহর রাসূল”।
প্রথম অংশ “আল্লাহ ছাড়া আর কোন সত্য উপাস্য নেই” এর অর্থ হচ্ছে— একমাত্র তিনি ছাড়া অন্য কেউ উপাসনা পাওয়ার অধিকার রাখে না। তার কোন অংশীদার বা সন্তান-সন্ততি নেই।
মুসলিম হতে হলে ব্যক্তিকে আরও অবশ্যই:—
 মহাগ্রন্থ আল-কুরআনকে আল্লাহ তা‘আলা কর্তৃক অবতীর্ণ আক্ষরিক ওহী হিসেবে বিশ্বাস স্থাপন করতে হবে।
 কিয়ামতের দিন বা পুনরুত্থান দিবসকে সত্য বলে বিশ্বাস করতে হবে। বিশ্বাস করতে হবে যে, কুরআন শরীফে আল্লাহ তা‘আলার ওয়াদার ফলশ্রুতি হিসেবে অবশ্যই সে দিন উপস্থিত হবে।
 ইসলামকে দ্বীন বা জীবন ব্যবস্থা হিসেবে পেয়ে সন্তুষ্ট থাকবে।
 একমাত্র আল্লাহ তা‘আলা ব্যতীত অন্য কারো ইবাদত বা উপাসনা করবে না।
রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন:
لَلَّهُ أَشَدُّ فَرَحًا بِتَوْبَةِ عَبْدِهِ حِينَ يَتُوبُ إِلَيْهِ مِنْ أَحَدِكُمْ كَانَ عَلَى رَاحِلَتِهِ بِأَرْضِ فَلاَةٍ فَانْفَلَتَتْ مِنْهُ وَعَلَيْهَا طَعَامُهُ وَشَرَابُهُ فَأَيِسَ مِنْهَا فَأَتَى شَجَرَةً فَاضْطَجَعَ فِى ظِلِّهَا قَدْ أَيِسَ مِنْ رَاحِلَتِهِ فَبَيْنَا هُوَ كَذَلِكَ إِذَا هُوَ بِهَا قَائِمَةً عِنْدَهُ فَأَخَذَ بِخِطَامِهَا ثُمَّ قَالَ مِنْ شِدَّةِ الْفَرَحِ اللَّهُمَّ أَنْتَ عَبْدِى وَأَنَا رَبُّكَ. أَخْطَأَ مِنْ شِدَّةِ الْفَرَحِ

  • অর্থাৎ “কোন বান্দা তাওবা করলে আল্লাহ তা‘আলা ঐ ব্যক্তির চেয়ে বেশি খুশি হন, যে মরুভূমিতে সফরে ছিল। অতঃপর বাহন তার পিঠের উপরে রক্ষিত খাদ্য ও পানীয় নিয়ে পালিয়ে গেল। সে ব্যাপকভাবে খুঁজাখুঁজি করে না পেয়ে নিরাশ হয়ে গাছের নিচে এসে ঘুমিয়ে পড়ল। এমতাবস্থায় (ঘুম থেকে জেগে) দেখল তার সওয়ারী তার কাছেই দাঁড়িয়ে আছে। সে তার লাগাম ধরে অত্যন্ত খুশি হয়ে বলল: হে আল্লাহ!তুমি আমার বান্দা এবং আমি তোমার রব বা প্রতিপালক। অত্যন্ত খুশি হয়ে সে ভুল করে বসল।” 





⚠️🔴⚠️🔵⚠️



🔴 " জীবনের অর্থ " THE MEANING OF LIFE " 🔵
 
https://youtu.be/952oh0IDtvs

মন্তব্যসমূহ